সাইফুল ইসলাম বাবুল

গোপন বিষয় লুকিয়ে আছে কারো মনে, আবার জনে জনে, সমাজে, রাষ্ট্রে। রাষ্ট্রের কিছু গোপন বিষয় গোপনে থাকে, থাক না রাষ্ট্রের খাতিরে। অন্য খানে গোপন থাকেনা কোন বিষয়। যেমন: কোন নারী ঘাটতি ব্যাপার যখন ঐ নারীর ইজ্জতের প্রশ্ন উঠে তখন বেশী বেশী করে প্রচার হয়। আমাদের সমাজটা এ রকম তবুও সমস্যা নাই। অথচ সমাজে বিধ্বংসী বিষয় গুলো গোপনে থেকে যায়।

ইদানিং অনেক লোক আঙুগুল ফুলে কলা গাছ। ভিটামিনের গোপন রহস্য কি ? জানলেও বলবেনা, পেলে ও ধরবে না, মহা জলসা হবে, প্রসংশা হবে। তাকে নেতা বানানো হবে। মনে হবে এই মাত্র স্বর্গ থেকে আমদানী। ছড়ি ঘুরাবে সমাজ। পাঁচ হাজার টাকার কৃষি ঋনের নোটিশ যায় বিভিন্ন দপ্তরের দেয়ালে। নিরাপরাধ লোকের কাছে নোটিশ যাবে ফালাও করে। এ বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিল জালিম দাদা আর আলিম দাদার মধ্যে। জালিম দাদা বলে আরে আলিম তুমি একটা নির্বোধ। তোমারে কিসে পাইছে এ সব দেশ প্রেম? সত্যান্বেষণ এগুলোর জন্য ঘুম হারাম কইরা ঝুকি নেবার? আমিতো কৈ এর তেলে কৈ ভাজি আর মজা নিয়ই। দেখনাই নেতা হইছি অন্যের পয়সায়। সে দিন দেখনাই পার্টি অফিসে কর্মী আসল থানায় নাকি মামলা হবে। হাবভাব দেখে দিয়ে গেল লাখ টাকা। ফোন করলাম সংযোগ ছাড়া খুশি হয়ে চলে গেল তারা। পর দিন পুলিশ দৌড়াইল। আমার মোবাইল বন্ধ। একবার মোবাইল বন্ধ মানে লাখ টাকা।পরদিন দেখা হল বলল লিডার আমাদের কি অবস্থা? কি বোকারাস আমারটা আমি নিলাম, পুলিশেরটা দিবিনা। এই হচ্ছে অবস্থা।

আলিম বলল আপনার খোজ নেয়া উচিৎ ছিল। থানায় গিয়ে বুঝাতে পারতেন লোক গুলো নিরীহ। আর যদি বুঝাতে না পারেন তবে টাকা নিলেন যে। আরে বোকা মোর জন্ম হলো টাকা নেয়ার আর তোর জন্ম হলো টাকা দেয়ার। সোজা কথা বুঝস না ? আমার মাথায় দেড কেজি মগজ বুঝলি। ঐ ব্যাটা সৎ লোকেরে কে মানে ? মানে না মানার অভিনয় করে পিছনে ঠিকই বুড়া আঙুগুল।

ধর একজন সৎ লোক চেয়ারম্যান হলো পাঁচ বছর পর তার পোষ্টারের টাকাও নাই তারে কে ভোট দিবো। দুনিয়া এখন নগদ নারয়ন। এখন দূর্নীতি জায়েজ, কালোবাজারী জায়েজ, দস্যুতা জায়েজ,সন্ত্রাস জায়েজ। মাঝে মধ্যে দুএকজনের ফাঁসি হবে, ক্রসফায়ার হবে, এগুলোতো দূর্নীতি রক্ষার উপহার। লেবাস ধরতে হবে, লেবাস গুলো দেখতে ভিন্ন রকম। মহান মুক্তি যুদ্ধের সময় যারা যুদ্ধ করেছে তারা দেশ প্রেমিক আর যারা বিরোধীতা করেছে তারা নিঃসন্দেহে দেশ হিতোষী ছিলনা।

এখন একদল দেশ প্রেমিকের দলে যোগ দিলো। রাতারাতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারন করলো। শুরু করলো আকাশ যেন দুধে চনা মিশ্রণ, প্রশ্নবিদ্ধ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’। এখন চলছে ঠাট্টা, তাই সেখান থেকে লেবাস ধারীদের বের করতে হবে। না হয় বাঙ্গালীর হাজার বছরের ঐতিহ্য রক্ষা পাবেনা।

আরেক দল স্বর্গের টিকেট বিক্রেতা, ভারত থেকে দেশ রক্ষা, গনতন্ত্র, স্বাধীনতা,মত প্রকাশের অধিকার ইত্যাদি নানা রকমের পশরা নিয়ে আমাদের সামনে হাজির। আমরা লুপে নিলাম। আমি একবার পত্রিকায় দেখলাম বিডি ফুডসের রপ্তানি করা মিষ্টি কুমডার ভিতর হিরোইন। বিডি ফুডসের মালিক একজন যুদ্ধাপরাধী। ভারত থেকে দেশ রক্ষার জন্য তাদের সাথে বসে রাজনীতির ফর্মূলা দেয়া। প্রতিবেশী দেশের সাথে দ্ধিপক্ষীয় কোন দাবী ক্ষমতায় থাকা কালীন করেনাই। বিনা বাধায় তালপাট্টি ছেড়ে দেয়া, বিষয়টাকি নতজানু মনে হয়না? স্বাধীনতার পর মাদক লাইসেন্সের বৈধতা দাতা কে ?

৭০ এর নির্বাচনে ভোটে জেতা বাঙ্গালীদের ক্ষমতা না দেয়া কি গনতান্ত্রিক ছিল? হ্যা-না মেম্বার চেয়ারম্যান , দিয়ে বাধ্যতা মুলক জিতানো ব্যাবস্থা করে সামরিক স্বৈরচারকে বৈধতা দেয়া কি গনতানত্রিক ছিল? মিডিয়া কূ কখন থেকে শুরু। ৮০ এর দশক চট্টগ্রাম কলেজ সহ অন্যান্য কলেজে একটি বিশেষ ছাত্র সংগঠনের পত্রিকা ছাড়া অন্য পত্রিকা প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।

দেদারছে চলছে ইতিহাস বিকৃতি।

৭৭ এর বিমান বাহিনীর চৌকস সেনাদের গুপ্তহত্যা এগুলো গুম ছিলনা ? ইনডিমিনিটির মত অমানবিক অধ্যদেশ সংসদে পাশ করা কতটুকু মানবিক? এখন তারাই দেশ প্রেমিক। চোখ বুলালে দেখা যাবে তাদের মস্ত বড় শিল্প প্রতিষ্টান, হাজার কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স আর বড় বড় ব্যাবসা। তারা টাকার জোরে বিদেশে বসে ও মাস্তানী চালাতে পারে। মনে হয় এক জন দাউদ ইব্রাহীম। তাদের ভিটামিনের উৎস হতে পারে মুক্তিযুদ্ধের সময় লুন্টিত সম্পদ, না হয় দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রীয় লুন্টনের অর্থ। না হয় বৈধ ব্যবসা ছাড়া কিভাবে শত কোটি টাকা অর্জিত হয়। এটা দেখে যাদের ভালো থাকার কথা তারাও প্র্যাকটিস শুরু করলো।” তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই”।

এখন আবার শুরু হলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন। ঐ যে জালিম দাদার কথা সৎ থাকলে পরেরবার তলিয়ে যাবে। অন্যরা যদি টাকা দিয়ে ভোট ও প্রশাসন কিনে। আলিম মিয়া হা করে চেয়ে থাকে এসব বয়ান শুনে । জালিম দাদা কয় যাও আর কোনদিন ভালা কথা বলবানা। যদি বল ঐ দেখো তালিম মিয়ারা আছে হুকুম পালন করবে। খোলা চোখে দেখলে এখন দেখব বাজারের ফেরিওয়ালার ছেলে নেতা, পানের দোকানীর ছেলে নেতা, চায়ের দোকানীর ছেলে নেতা, কেরানির ছেলে নেতা, হোক না দোষের কিছু নাই। দোষ ঐখানে জন্ম দোষ যার নাই।

রাজনীতি ফেরি করতে গিয়ে দলের বারোটা বাজার দিকে মহা নজর। কয় কোটি টাকার মালিক বাড়ী, গাড়ি, সব হলো সুন্দরী স্ত্রী ফুটফুটে সন্তানও আছে আবার পরের ঘরের দিকেও নজর। পানের দোকানীর বহুতল ভবন কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স ইমেজও গড়ে উঠল, এখন সে সর্বগ্রাসী। আর চায়ের দাকানী তো এখন থ্রিস্টার মানের। চায়ের দোকানে বসে কালোবাজারি চলছিল। তস্কর ভালো ছিল। মুখরোচক কথার বুলি স্বনামে বেনামে অনেক জমি। আবার দখলে যাবে বলে অন্য মালিকদের তোপা আরো কত কি? নেতার চাকরানীও এখন মহারানী। ঐ চায়ের দোকানী কিন্তু রাষ্ট্রের উপর মহলের সাথে ওঠাবসা এখন তার সেটিং য়ে চলছে প্রশাসন।

তিনি বলেন ভালো মানুষদের একটা থাপ্পড় দাও, একটু বেইজ্জত কর, আর রাজনীতি নিয়ে কোনো কথা বলবে না। তাই ফেরিওয়ালা মানুষ বেইজ্জত করায় ব্যস্ত। সব সময় শুনি মাটি ও মানুষের নেতা আমার কেন যেন বিশ্বাস হয়না। কারণ মানুষের নেতা হওয়া যায়। কারণ মানুষ কথা বলে প্রতারিত হয়। মাটি কিন্তু কথা বলে না তাই প্রতারিত হয় না। তাই সারা জীবন মানুষের নেতা হউন, মাটির নেতা হবেন না। কারণ আপনার শেষ ঠিকানা মাটি। মাটি আপনাকে আদর যতœ দিয়ে লালন করেছে। আপনি প্রতিনিয়ত মাটির সাথে বেঈমানি করলেও সে কিছুই বলবে না। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলে “বদ্দার এডে উ¹ার বাচা তাপালিং আরা কেন গইরগম”। অর্থাৎ বড় ভাইয়ের কাছে সব বাছাই করা খারাপ লোক। নেতা নাকি ভাড়ায় চলে।টাকায় ফোন, একটু বেশিতে স্বশরীরে যাবে। ভালো খারাপের বাচবিচার নাই। পুরান পাগলে ভাত পায়না নতুন পাগল।

তারা অডেল টাকার মালিক। এখন একটু একটু রাজনীতির পদ পদবীতে আসতে চায়। তাই একটু একটু ধরে বান্দে টাকা-পয়সা খরচ করে অনুষ্ঠান করায়। শেষে বদ্দার রোষানলে ফেলে চলে যায়। করব কি? সোজা সাপটায় বলি পরাজিত হউন তবু অপরাজনীতির দরকার নাই। কারণ সেটা একদিন আপনাকেও খাবে। আপনার মামলা কত? মানুষের মনের দুঃখ কত? গজব কত? এগুলোর সাথে আপনার সম্পদের এবং ইমেজের তুলনা করুন। আপনাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। ছাত্রনেতারা যদি মাদকাসক্ত হয়, নেতারা যদি মদ্যপায়ী হয় তবে কিসের মাদক বিরোধী অভিযান? কোনদিন সফল হবে না। হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন” কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য অনাখাঙ্কিত কাজ কর ” এখন সেই যুগ নাই । আর নয় অনাখাঙ্কিত কাজ। এত হাড়ি একটু ভাঙ্গুন।

পুনশ্চ : পবিত্র ভূমিতে ¯্রষ্টার সান্নিধ্যের জন্য যাওয়া হয়। সেলফি রাজনৈতিক সভা করার জন্য নয়। কারণ উদ্দেশ্যমূলক ইবাদত কবুল হয় কিনা জানিনা।